Tuesday, May 14, 2013

পা ফুলে গেছে? জেনে নিন কি কি কারণে পায়ে পানি আসে

পা ফুলে গেছে? জেনে নিন কি কি কারণে পায়ে পানি আসে

Imageদুই পা ফুলে যাওয়া বা পায়ে পানি আসা একটি খুবই মারাত্মক রোগের লক্ষন। শরীরের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় অঙ্গের যেমন হূদযন্ত্র, লিভার, কিডনী, খাদ্যনালীর কাজের ব্যঘাত ঘটলে পায়ে ও গায়ে পানি আসে। নিম্নে গায়ে ও পায়ে পানি আসার কয়েকটি কারন আলোচনা করা হলোঃ
  • হূদযন্ত্রের কার্যকারিতা কমে গেলেঃ
হূদযন্ত্রের কার্যকারিতা কমে গেলে, উচ্চ রক্ত চাপ, হার্টের রক্ত চলাচলের ব্যাঘাত, হূদযন্ত্রের ভাল্বের সমস্যা হলে হার্টের মাংসপেশীর কার্যকারিতা কমে আসে ফলে পায়ে, পেটে, বুকে পানি আসে। এসব রোগীর বুকে ব্যথা, উচ্চ রক্ত চাপ, বুক ধড়ফড় করা, অতিরিক্ত ক্লান্তবোধ, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি লক্ষণ থাকে।
  • লিভারের সমস্যাঃ
লিভারের সমস্যা ও লিভার সিরোসিস হলে প্রথমে পেটে ও পরে পায়ে ও বুকে পানি জমে যায়। হেপাটাইটিস ভাইরাস বি ও সি, অতিরিক্ত মধ্যপান, লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমে লিভারের সিরোসিস হয়। এসব রোগীর খাবারে অরুচি, হলুদ প্রশ্রাব, রক্ত বমি ইত্যাদি লক্ষণ থাকে।
  • কিডনির সমস্যাঃ
কিডনীর সমস্যা, নেফ্রোটিক সিনড্রোম, নেফ্রাইটিস, ও কিডনি বিকল, হলে প্রথমে মুখে, পরে পায়ে ও বুকে পানি আসে। এসব রোগীর বেশী বেশী প্রশ্রাব, বমি বমি লাগা, খাবারে অরুচি, প্রশ্রাব ফেনা ফেনা, প্র্রশ্রাবের রং ঘন সরিষার তেলের মত, কম প্রশ্রাব হওয়া সইত্যাদি লক্ষণ থাকে।
  • রক্তে আমিষের পরিমাণ হ্রাসঃ
রক্তে আমিষের মাত্রা কমে গেলে পরিমিত খাবার না খেলে, হজম না হলে, খাদ্য নালী থেকে আমিষ বের হয়ে গেলে, কিডনি দিয়ে আমিষ বেরিয়ে গেলে, আমিষ শরীরে তৈরী না হলে, রক্তে আমিষের মাত্রা কমে যায়। রক্তে আমিষ কমে গেলে পায়ে, পেটে ও বুকে পানি আসে।
  • থাইরয়েড সমস্যাঃ
থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা, থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা শরীরে কমে গেলে পায়ে পানি আসে। এই রোগে রোগীর গলগন্ড, শীত শীত লাগা, মোটা হয়ে যাওয়া, মাসিকের রক্ত বেশী যাওয়া, কোষ্টকাঠ্যিন্য হওয়া ইত্যাদি লক্ষণগুলো থাকে।
  • ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ
ওষুধের সেবনের কারণে পা ফুলে যাওয়া, ব্যথার ওষুধ যেমন- ডাইক্লোফেনাক, ন্যাপরোক্সেন, আইবুপ্রোফেন, ইটোরিকক্সিব খেলে পায়ে পানি আসে। এছাড়া উচ্চ রক্ত চাপের ওষুধ ক্যালাসিয়াম চ্যানেল ব্লকার যেমন নিফেডিপিন, অ্যামলোডিপিন এসব ওষুধ খেলে পায়ে পানি আসতে পারে।
পায়ে পানি আসলে করনীয়ঃ
পায়ে পানি আসলে রোগীকে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে। রোগীর ইতিহাস, শারীরিক পর্যবেক্ষণ ও কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা যেমন CBC, Urine R/E, বুকের এক্স-রে, ইসিজি, হরমোন, পেটের আলট্রাসনোগ্রাম, হার্টের ইকো-কার্ডিওগ্রাম ইত্যাদি করে পানি আসার কারণ নির্ণয় করা যায়।
কারণ বের করে তার প্রতিকার করতে হবে, তবেই পা ফুলা সেরে যাবে।
মূল লেখকঃ ডাঃ এ,কে,এম, মোস্তফা হোসেন  | ইত্তেফাক, ৯ জুন ২০১২ তে প্রকাশিত।
If You Enjoyed This Post Please Take 5 Seconds To Share It.

1 comment:

Powered by Blogger.