জেরোসিস
এ ক্ষেত্রে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়াজনিত বিভিন্ন সমস্যা যেমন চুলকানি ও খুসকি দেখা যায়। যে কোন বয়সেই এটি হতে পারে তবে বয়স্করা বিশেষ করে ডায়াবেটিক রোগীদের জেরোসিস হয় বেশি। তাই ত্বককে আদর্্র রাখাই হবে মূল চিকিৎসা, এ ক্ষেত্রে তেল জাতীয় জিনিস ইমোলিয়েন্ট ত্বকে ব্যবহার করা যায়। ইমোলিয়েন্ট হচ্ছে অলিভ ওয়েল বা জলপাই তেল, বহুল ব্যবহূত সরিষার তেল বা নারকেল তেল। এছাড়া অয়েন্টমেন্ট যেমন ৫-১০ ভাগ ইউরিয়া ত্বকে মাখা যায়। ঠোঁট বা ত্বকের যে কোন অংশে ফাটা রোধে বা এর চিকিৎসায় গ্লিসারিন আমাদের দেশে বহুল ব্যবহূত হচ্ছে।
ইকথায়োসিস
ত্বক শুষ্ক হয়ে মরা চামড়ার মতো অাঁশ ওঠে। সাধারণত হাত ও পায়ে বেশি হয়। চিকিৎসা জেরোসিসের মতই, এছাড়া ১-৫ ভাগ স্যালিসাইলিক এসিড ব্যবহার করা যায়। শুষ্ক ত্বকের চিকিৎসায় মুখে খাওয়ার ওষুধ বা ডিজিজ মডিফাইং এজেন্ট খুব জরুরি নয়। লোকাল বা শুষ্ক জায়গা আদর্্র রাখলেই হল।
খোস-পাঁচড়া
শীতে গরমের তুলনায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কম থাকা হয়। গোসল করা হয় কম, হাত-পাও ধোয়া হয় কম এবং একই কাপড় বারবার ব্যবহার করে ভালো মতো ধুয়েও তেমন ব্যবহার করা হয় না। এ জন্যই এক ধরনের পরজীবী সাইকোপটিস স্ক্যাবি দিয়ে অত্যন্ত ছোঁয়াচে এ রোগটি হয়। এ ক্ষেত্রে প্রচণ্ড চুলকানি (বিশেষ করে রাতে) হাতে, পায়ে, পেটে নাভির কাছে, জনন অঙ্গের চারপাশে, দুই পায়ের মাঝে হয়।
প্রধান চিকিৎসা হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা। পারমেথ্রিন নামক ট্রপিক্যাল ক্রিম এখন এতে বেশ ব্যবহূত হচ্ছে, মাথা ও মুখ ছাড়া গলা থেকে পা পর্যন্ত ক্রিম রাতে মেখে দিনে ধুয়ে ফেলা যায়। সাধারণত একবার ব্যবহার করলেই চলে। তবে এ ক্রিম দিয়ে চিকিৎসা পরিবারের সবার একসঙ্গে নিতে হবে, এ ক্রিম ছাড়াও সালফোনাইল ইউরিয়া, স্ক্যাবিওলও ব্যবহার করা যায়।
ত্বক অতিরিক্ত কালো হওয়া
শীতে শরীর গরম রাখার উদ্দেশ্যে আমরা সূর্যের আলোয় রোদ পোহাই। এছাড়া বিভিন্ন উৎসবে কসমেটিকসের ব্যবহারও এ সময় বেড়ে যায়। এ সবই ত্বকে হাইপার পিগমেন্টেশন করে ফলে ত্বক কালো হয়ে যায়। আমাদের দেশে যে কসমেটিকস পাওয়া যায় তা ত্বকে সংবেদনশীলতা তৈরি করে কিনা জানা যায় না। এ ছাড়া কোন ত্বকে কি ধরনের কসমেটিকস ব্যবহার করা যায় সে ব্যাপারেও আমরা ততটা সচেতন নই। কসমেটিকস লাগানোর পর রোদে না যাওয়াই ভালো। যদি যেতেই হবে তবে সানব্লকার বা সান প্রটেকটিং ফ্যাক্টর ১৫ বা তার উপরে মেখে বের হওয়া ভালো। এ ব্লকার সূর্যরশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বককে রক্ষা করে।
খুসকি
শীতে খুসকি বাড়ে। এ জন্য মেডিকেটেড শ্যাম্পু ব্যবহার করলে ভালো হয়। কিটোকোনাজল, অ্যালোভেরা বা টার শ্যাম্পু ব্যবহার করা যায়।
এ ছাড়া এ সময় পুরনো চর্মরোগ যেমন সোরিয়াসিসে স্কেলিংয়ের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।
ডা. মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার
সহযোগী অধ্যাপক, ত্বক ও যৌনব্যাধি বিভাগ
যুগান্তর ২০-১১-১০
0 comments: