Tuesday, May 14, 2013

ব্যথাযুক্ত ঋতুস্রাব—প্রতিকার ও চিকিৎসা

ঋতুস্রাব বা মাসিকের সময় তলপেটে কোনো ব্যথা বা কষ্টদায়ক অনুভূতি হয় না, এমন নারীর সংখ্যা কম। পরিমাণগত দিক দিয়ে এ ব্যথা সামান্য থেকে তীব্র যেকোনো মাত্রায় হতে পারে। তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এ ব্যথার পরিমাণ যখন এমন হয় যে তা দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত করে, তখনই কেবল এটাকে অসুস্থতা বা ডিজমেনোরিয়া বলে গণ্য করা হয়। ডিজমেনোরিয়া দুই ধরনের—প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি।
প্রাইমারি ডিজমেনোরিয়া
সাধারণত ১৮ থেকে ২৪ বছরের তরুণীরা এতে বেশি ভোগেন। এর নির্দিষ্ট কোনো কারণ জানা নেই, তবু কারণ হিসেবে কিছু বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়ে থাকে। যেমন, মাসিকের সময় ব্যথার প্রতি সংবেদনশীলতা বেড়ে যাওয়া, ঘরে-বাইরে অশান্তি, পরীক্ষার চাপ, বেকারত্ব, ভগ্নস্বাস্থ্য ইত্যাদি। এ ছাড়া গবেষণায় কিছু হরমোনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে, যেমন-প্রোজেস্টেরন, প্রোস্টাগ্লান্ডিন, ভেসোপ্রেসিন ইত্যাদি। আরেকটি চমকপ্রদ তথ্য হলো, অন্তত একবার গর্ভধারণ এবং স্বাভাবিক প্রসবের পর এ সমস্যাটি আপনাআপনি সেরে যায়। গর্ভধারণ ও প্রসবের মাধ্যমে জরায়ু পরিপক্বতা লাভ করে এবং সাধারণত এরপর ডিজমেনোরিয়া হয় না। মাসিক শুরুর সঙ্গে এ ব্যথা শুরু হয় এবং প্রথম দিনের পর আর ব্যথা থাকে না। তলপেটে মোচড়ানো ধরনের ব্যথা হয়। কোমরে ব্যথা হতে পারে। ঊরু বা থাইয়ের ভেতরের অংশেও ব্যথা হতে পারে। এ ব্যথা কখনো ঊরুর পেছনে বা হাঁটুর নিচে যায় না (তেমন ক্ষেত্রে বুঝতে হবে অন্য সমস্যা রয়েছে)। এ সময় ব্যথার প্রভাবে রোগীকে বিমর্ষ দেখায়। তার বমি ভাব অথবা বমি হতে পারে; ডায়রিয়া কিংবা প্রস্রাবে ব্যথাও হতে পারে।
প্রতিকার
কিশোরী বয়সে মাসিক সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়া জরুরি। এ ক্ষেত্রে মা, বড় বোন কিংবা অন্য নিকটাত্মীয়ের দায়িত্ব অনেক। বিষয়টি সেকেন্ডারি স্কুলপর্যায়ে পাঠ্য রয়েছে ঠিকই, তবে শ্রেণীকক্ষে শিক্ষিকার খোলামেলা বৈজ্ঞানিক আলোচনা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক তথ্য জানা থাকলে ভীতি কমবে। ভীতি কমলে ব্যথার তীব্রতা কম অনুভূত হবে। এ ছাড়া নিয়মিত ব্যায়াম, ভগ্নস্বাস্থ্যের উন্নয়ন, অশান্তির সঠিক সমাধান ইত্যাদি বিষয়ও আমলে আনতে হবে।
চিকিৎসা
বাজারে যেসব ব্যথানাশক (এনএসএআইডি) ওষুধ পাওয়া যায়, তার সবই শরীরে প্রোস্টাগ্লান্ডিন উৎপাদন কমায় এবং ডিজমেনোরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর। তবে গাইনি ডাক্তারদের প্রথম পছন্দ মেফেনামিক এসিড ট্যাবলেট। আজকাল ল্যাপারোস্কোপির মাধ্যমেও এ রোগের বিবিধ চিকিৎসা রয়েছে।
সেকেন্ডারি ডিজমেনোরিয়া
অনেক গাইনি রোগের কারণে মাসিকের সময় ব্যথা হতে পারে, যেমন-তলপেটের ইনফেকশন, জরায়ুর টিউমার, পলিপ, জন্মগত ত্রুটি, এন্ডোমেট্রিয়োসিস ইত্যাদি। বিবিধ কারণ থাকায় মাসিকের সময় ব্যথার ধরনও ভিন্ন হয়ে থাকে। সাধারণত মাসিক চক্রের শেষ সপ্তাহে তলপেটে ভার ভার অনুভূত হয়। মাসিক শুরুর তিন-চার দিন আগে থেকেই ব্যথা হয়। মাসিক শুরু হলে ব্যথা কমতে থাকে। সেকেন্ডারি ডিজমেনোরিয়ার জন্য আলাদা কোনো চিকিৎসা নেই। প্রথমে অন্তর্নিহিত রোগটি সঠিকভাবে নির্ণয় করতে হবে। এরপর সে রোগের চিকিৎসাতেই ভালো হবে প্রতি মাসের এ যন্ত্রণা।
মূল লেখকঃ এনামুল হক, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ও ল্যাপারোস্কোপিক সার্জন | প্রথম আলো, তারিখ: ২৫-০৮-২০১০
If You Enjoyed This Post Please Take 5 Seconds To Share It.

5 comments:

  1. 15 din pore masik hobar karon ki ki hote pare

    ReplyDelete
  2. This comment has been removed by the author.

    ReplyDelete
  3. আমি কন্ডম ছাড়া সেক্স করেছি বীর্যপাত হয় নি,তাই এখন আমার মাসিক হচ্ছে না।আমি কি ঔষধ খেলে মাসিক হবে।সেক্স করেছি 30 জানুয়ারি মাসিকের তারিখ 20 ফেব্রুয়ারি কিন্তু মাসিক হচ্ছেনা এখন আমি কি করব।মাসিক হওয়ার কোনো ঔষধ আছে কি?

    ReplyDelete
  4. Ak masei 2 bar Means hoi er karon ki

    ReplyDelete

Powered by Blogger.